নিজস্ব প্রতিনিধি ৩ ডিসেম্বর ,২০১৯
জহর রায়
বাংলা তথা ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে জহর রায় এক কিংবদন্তি শিল্পী। তিনি মূলত একজন কৌতুক অভিনেতা হিসাবেই বেশী পরিচিত। তাঁর অভিনীত প্রতিটি সিনেমাতে যেভাবে হাস্যরস পরিবেশিত হয়েছে তা এককথায় অসাধারন।
জন্ম ও পরিবার জীবন
১৯শে সেপ্টেম্বর ১৯১৯ অবিভক্ত বাংলার বরিশালে তথা ব্রিটিশ শাসিত ভারত বর্ষে জহর রায় জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পিতা সতু রায়ও রঙ্গমঞ্চ ও চিত্রজগতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
শিক্ষা জীবন
জহর রার ১৯৩৮ সালে নারকেলডাঙ্গা হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন। এরপর তিনি পাটনা থেকে আই এ পাশ করেন এবং সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রুফ রিডিং এর কাজে নি্যুক্ত হন। এই সবকিছুর মধ্যেই তিনি তাঁর অভিনয় চালিয়ে যেতে থাকেন।
চলচ্চিত্র জীবন
জহর রায় ১৯৪৬ সালে কলকাতায় আসেন এবং অর্ধেন্দু মুখার্জীর পরিচালিত ‘পূর্বরাগ’ সিনেমায় প্রথম অভিনয় করেন। এরপর বিমল রায় পরিচালিত ‘অঞ্জনগড়’ সিনেমায় একটি গুরূত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন। এরপর ১৯৫৩ সালে জহর রায় রংমহল নাট্যমঞ্চে যোগদান করেন এবং পরবর্তীকালে নাটক নির্দেশনা শুরু করেন। তিনি এককভাবে এবং অজিত চ্যাটার্জীর সাথে যৌথভাবে বেশ কিছু কৌতুক রেকর্ডও করেছেন। জহররায়ের অভিনীত অগনিত সিনেমার মধ্যে ‘ধন্যিমেয়ে’ ‘ছদ্মবেশী’ ‘ভানু গোয়েন্দা জহর অ্যাসিস্ট্যান্ট’ বিশেষভাবে উল্লেখ্য। ‘পরশ পাথর’ সিনেমাটিতে তিনি তুলসী চক্রবর্তীর একজন চাকর এর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। যদিও চরিত্রটি খুবই ছোটো ছিল তবে তাঁর অভিনয়ের গুনে সেটিও মানুষের মনে যায়গা করে নিয়েছিল। এমনকি ‘গুপী গাইন ও বাঘা বাইন’ সিনেমাটিতে কূট মন্ত্রনাদায়ী ষড়যন্ত্রী মন্ত্রীর ভূমিকাতেও অসাধারন অভিনয় করেছেন। ‘ছদ্মবেশী’ সিনেমাটিতে তিনি একটি গানও গেয়েছেন। তাঁর অভিনয় জীবনের শেষের দিকে তিনি ঋত্বিক ঘটকের সিনেমা ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’ তে অতিথি শিল্পী হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।
অভিনীত চলচ্চিত্রসমূহ
১৯৪৭ পুর্বরাগ
১৯৪৮ অঞ্জনগড়
১৯৫৫ ডাকিনির চর
১৯৫৭ উল্কা, পরশ পাথর
১৯৫৮ রাজলক্ষী ও শ্রীকান্ত , বাড়ি থেকে পালিয়ে
১৯৬২ অতল জলের আহবান
১৯৬৩ পলাতক, সূবর্ণরেখা
১৯৬৫ অভয়া ও শ্রীকান্ত
১৯৬৬ কাল তুমি আলেয়া
১৯৬৭ নয়নিকা সংবাদ
১৯৬৯ গুপী গাইন বাঘা বাইন
১৯৭০ নীশিপদ্ম, ভানু গোয়েন্দা জহর অ্যাসিস্ট্যান্ট
১৯৭১ ধন্যি মেয়ে
১৯৭২ মর্জিনা আবদুল্লা
১৯৭৪ যুক্তি তক্কো আর গপ্পো, যমালয়ে জীবন্ত মানুষ
১৯৭৫ ছুটির ফান্দে
মৃত্যু
জহর রায় ১১ই আগষ্ট ১৯৭৭ সালে পরলোক গমন করেন।
এই নিবন্ধটি পড়ার জন্যে ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে এই পেজ এবং ওয়েবসাইট সম্পর্কে আপনার বন্ধুদেরকে জানান। নিজের ফেসবুক বা টুইটারে শেয়ার করুন।ধন্যবাদ।