নিজস্ব প্রতিনিধি ২০ নভেম্বর ২০১৯
সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়
বাংলা দূরদর্শন তথা সিনেমার জগতের এক দিক্পাল শিল্পী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। আজ ও তিনি নিজের অভিনয় দিয়ে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে প্রচুর ভাল ভাল সিনেমা ও ধারাবাহিক উপহার দিয়ে চলেছেন।
ছোটবেলা ও পরিবার জীবন
সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় ২১শে ফেব্রুয়ারী ১৯৩৭ সালে ব্রিটিশ শাসিত ভারতের বাংলায় জন্মগ্রহন করেছেন। তিনি বংলার কুমিল্লা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন । তাঁর পিতা শশধর চট্টোপাধ্যায় ছিলেন রেলের স্টেশন মাস্টার। তাঁরা ১০ বোন ছিলেন কিন্তু তাদের কোনো ভাই ছিলনা। প্রাথমিক জীবনে সাবিত্রী দেবী খুবই অর্থকষ্টের মধ্যে দিয়ে বড় হয়েছিলেন। সাথে ছিল প্রচুর জীবন সংগ্রাম। তবে আজ সেসব অতীত। তিনি অবিবাহিতা। তবে বই পড়তে খুবই ভালবাসেন। তাই বইই তাঁর নিত্যসঙ্গী।
অভিনয় জীবন
প্রাথমিক জীবনে অর্থকষ্ট ছিল সাবিত্রী দেবীর নিত্যসঙ্গী। তবে সিনেমার প্রতি তাঁর অদ্ভুত আকর্ষণ তাকে টেনে নিয়ে যায় অভিনয়ের জগতে। অত্যন্ত অভাবের মধ্যে দিয়ে বড় হয়েও স্বপ্ন দেখা বা সেটাকে বাস্তবায়িত করার ইচ্ছা তিনি কখওনোই ছাড়েননি। তিনি নাট্যমঞ্চ থেকেই অভিনয় জগতে পদার্পন করেন।উত্তম কুমার থেকে শুরু করে বহু বড় বড় তারকার সঙ্গে জুটি বেঁধে তিনি চুটিয়ে অভিনয় করে গিয়েছেন। ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় একরকমের দূর সম্পর্কের আত্মীয় হতেন তাই তিনিই সাবিত্রী দেবীকে অভিনয়ের সু্যোগ করে দিয়েছিলেন।নাটক করতে করতেই সিনেমায় অভিনয়ের ডাক আসে। ‘পাশের বাড়ি’ সিনেমার জন্য তাঁর সঙ্গে যখন আলচনা চলছিল তখন তাঁর কথায় বাংলাদেশি টান থাকায় তাকে সেই সিনেমা থেকে বাদ দেওয়া হয়। তবে ঘটনাচক্রে অন্য কোনো অভিনেত্রী না পেয়ে তখন সাবিত্রী দেবীর কাছেই আবার ফিরে আসতে হয়। তখন সাবিত্রী দেবী ২০০টাকার মাস মাইনের শিল্পী।এরপর যখন সিনেমাটি মুক্তি পায়, সকলেই সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়ে যান। এরপর তাঁকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। একে একে সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে তিনি এগিয়ে চলেছিলেন। আর আমাদের উপহার দিয়েছেন -গলি থেকে রাজপথ, অবাক পৃথিবী, অনুপমা, দুই ভাই, ধন্যি মেয়ে, মাল্যদান, নিশিপদ্ম প্রভৃতি ছবিগুলো। সম্প্রতি ‘হেমলক সোসাইটি’ বা ‘ ঠাম্মার বয় ফ্রেন্ড’ এর মত বেশকিছু চলচ্চিত্রেও তিনি বেশ দাপটের সঙ্গেই কাজ করেছেন। তিনি এখনো বিভিন্ন সিনেমা বা টিভি সিরিয়ালেও কাজ করে চলেছেন। এই ৭৫ বছর বয়সেও তিনি অভিনয় করে চলেছেন। বার্ধক্য তাঁর শরীরে ছাপ ফেললেও অভিনয় দক্ষতা রয়ে গিয়েছে ঠিক আগের মতোই।
অভিনীত চলচ্চিত্র সমূহ
পুরষ্কার
বেঙ্গল ফিল্ম সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশন ‘কাল তুমি আলেয়া’ এর জন্য ১৯৬৭ সালে ভূমিকা সমর্থনকারী শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরষ্কার।
বি এফজে অ্যাওয়ার্ড- ‘মাল্যদান’ এর জন্য ১৯৭২ সালে সহায়ক ভূমিকাতে সেরা অভিনেত্রী।
১৯৯৯ সালে সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমী পুরষ্কার বাঙ্গালী থিয়েটারে অভিনয় করার জন্য।
২০১২ সালে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি ডিগ্রী।
বঙ্গ বিভূষন ২০১৩ সালে ভারতীয় চলচ্চিত্রের অবদানের জন্য পুরষ্কার।
পদ্ম শ্রী ২০১৪ সালে ফিল্মে অবদানের জন্য পুরষ্কার।